অনুক্রমনিকা
১. মাইগ্রেন কি?
২. মাইগ্রেন এবং স্বাভাবিক মাথা ব্যথার মধ্যে পার্থক্য কি?
৩. মাইগ্রেনের কারণ
৪. মাইগ্রেনের লক্ষণ
৫. কারা মাইগ্রেনের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ?
মাথাব্যথা শব্দটির সাথে সবাই পরিচিত। কর্মব্যস্ত ময় জীবনে মাথা ব্যথার সম্মুখীন হননি এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। মাথা ব্যাথা যে শুধু বড়দের হয় তা কিন্তু নয়। বরং ছোট দেরও নানা কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে মাথা ব্যথা হওয়া মানেই মাইগ্রেন নয় আর কোন ধরনের মাথাব্যথা কেই অবহেলা করার সুযোগ নেই।
মাইগ্রেন কি?
সহজ করে বলতে গেলে বলা যায় যে,মাইগ্রেন হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। সাধারণত এই ব্যথা মাথার এক পাশ থেকে শুরু হয়। পরবর্তীতে আস্তে আস্তে তা বিস্তৃত হয়ে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। মাইগ্রেন হলে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং সেই সাথে মাইগ্রেন আক্রান্ত ব্যক্তি মাথায় তীব্র ব্যথা ও যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকেন।
মাইগ্রেন এবং স্বাভাবিক মাথা ব্যথার মধ্যে পার্থক্য কি?
ক্রম | মাইগ্রেন | স্বাভাবিক মাথা ব্যথা |
১ | মাইগ্রেনের মাথাব্যথার সঠিক কারণ এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। | দীর্ঘ সময় ধরে একনাগারে কাজ করার ফলে ব্রেনে চাপ পড়ে। সেই চাপ থেকে মাথাব্যথা হতে পারে।
|
২ | মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত কমতে চায় না বরং আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে।
| বিশ্রাম নিলে এই ধরনের মাথাব্যথা কমে যায়।
|
৩ | মাইগ্রেনের মাথাব্যথা খুবই তীব্রতর হয়। | স্বাভাবিক মাথা ব্যাথা মাইগ্রেনের মত তীব্রতর হয় না। |
৪ | মাইগ্রেনের ব্যথা হলে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। | অপরদিকে স্বাভাবিক মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে এই ধরনের লক্ষণ দেখা যায় না
|
মাইগ্রেনের কারণ
মাইগ্রেন কেন হয় সেটির সঠিক কারণ সম্পর্কে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত একমত হতে পারেননি। কিছু কিছু কারণ সম্পর্কে আমরা ধারণা নিতে পারি যেখান থেকে মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে।
মাইগ্রেনের লক্ষণ
আপনার মাথা ব্যথা মাইগ্রেন কিনা সেটির কিছু লক্ষণ রয়েছে। সাধারণত মাইগ্রেনের মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে ব্যথা শুরু হওয়ার আগেই নানা ধরনের পূর্বাভাস দেখা যায়। আর মাইগ্রেনের মাথাব্যথার কারণে শুধু মাথাই ব্যথা করে না বরং মাথার সাথে সাথে চোখ নাক মুখ সহ আরো অনেক কিছুই আক্রান্ত হতে পারে। মাইগ্রেনের মাথাব্যথার লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-
কারা মাইগ্রেনের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ?
পুরুষদের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের ব্যথা বেশি দেখা যায়। একটি গবেষণা থেকে দেখা যায় মাইগ্রেনের ব্যথার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর অনুপাত ১ঃ৫। পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে এবং জন্ম বিরতিকরন ওষুধ সেবনের কারণে নারীদের মধ্যে নানা ধরনের হরমোনাল পরিবর্তন দেখা দেয়। এটিকেই প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়।
মাইগ্রেন হলে কি করবেন?
মাইগ্রেন হওয়ার লক্ষণ গুলো যদি দেখা দেয় তাহলে প্রথমেই আপনার উচিত হবে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা। কেননা সুস্থ থাকতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নেই। এছাড়াও ঘরোয়া কিছু ব্যবস্থা রয়েছে যা আপনি চাইলে করতে পারেন।
এ সকল ব্যবস্থা গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে। |
উচ্চ শব্দ এবং কোলাহল পূর্ণ পরিবেশ থেকে দূরে থাকতে হবে। |
সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। |
পরিমিত পরিমাণ পানি গ্রহণ করতে হবে। |
অতিরিক্ত কিংবা স্বল্প আলোতে কাজ করা যাবে না। |
মাত্রাতিরিক্ত স্মার্ট ডিভাইস এবং কম্পিউটার ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। |
দুশ্চিন্তা করা যাবে না এবং মানসিক চাপ থেকে বিরত থাকতে হবে। |
অতিরিক্ত মসলাদার খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। |
মাইগ্রেনের ব্যথা হলে নিরিবিলি পরিবেশে বিশ্রাম নিতে হবে। |
যা না বললেই নয়
মাইগ্রেনের ব্যাথাকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারো কারো ক্ষেত্রে মাথাব্যথা কয়েক ঘন্টা থাকতে পারে আবার কয়েকদিন ও থাকতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে এবং সেই সাথে সুষম খাদ্য গ্রহণের প্রতি জোর দিতে হবে।